জেলায় জেলায় মদের দোকান খুলবে ভারত সরকার! টিবিটি টিবিটি নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৮ | আপডেট: ১০:৫৭:পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৮ কথায় আছে, দুটি ব্যবসার কোনো মার নেই – ওষুধ এবং মাদক৷ দুটি বস্তুই যখন কারো দরকার হয়, না হলে চলে না৷ ফলে শিল্পহীন, চাকরিহীন, কর্মহীন পশ্চিমবঙ্গে অন্তত মদের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠছে প্রতি বছর, এটাই সরকারকে উৎসাহিত করার পক্ষে যথেষ্ট৷ এ কারণে সিদ্ধান্ত– সরকার মদের খুচরো বিক্রিতে নামবে৷মদের চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তাই জেলায় জেলায় সরকারি উদ্যোগে মদের দোকান ও বার খুলতে যাচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আবগারি দপ্তর৷৷ এর আগে দেশি মদ এবং আইএমএফএল, অর্থাৎ ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকার, যাকে চলতি কথায় ‘বিলিতি মদ’ বলা হয়, এই দুই ধরনের মদেরই বাণিজ্যিক সরবরাহের দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজের হাতে নিয়েছিল৷ রাজ্যের সমস্ত মদের দোকান, পানশালা এবং রেস্তোরাঁ, যেখানে মদ বিক্রি হয়, তাদের সবার লাইসেন্স নতুন করে নিতে হয়েছিল৷ এর পরের ধাপ ছিল চলতি বছরের জুলাইয়ে, এক হাজারেরও বেশি নতুন মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত, যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছিল৷কারণ, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং পথ দুর্ঘটনা এড়াতে, সামগ্রিকভাবে দেশের সড়কগুলিকে অপরাধমুক্ত রাখতে কেন্দ্র সরকার ২০১৭ সালেই এক নতুন আইন করে জাতীয় সড়কের ১,৫০০ মিটার ব্যাসের মধ্যে মদের দোকান, পানাশালা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার লটারির মাধ্যমে মদের দোকানের লাইসেন্স বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সেই বিধি-নিষেধ কার্যত আগ্রাহ্য করছিল৷তখন মমতা সরকারের যুক্তি ছিল, আশপাশের রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে মদের চোরা কারবার রুখতে, বেআইনি জাল মদের রমরমা ব্যবসা বন্ধ করতে এবং মদ্যপায়ীরা যাতে খাঁটি মদ পান, তা নিশ্চিত করতেই নতুন দোকানের লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত৷ এবার সরকার নিজেই মদের ব্যবসায় নেমে পড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় অবশ্য আসল কথাটি বলেছে৷বলেছে, মদের বিক্রি যে হারে বাড়ছে, সরকার এই খাতে রাজস্ব আদায় আরো বাড়াতে চায়৷ এবং সেই রাজস্ব আদায় করতে চায় সরাসরি, সরকারি মদের দোকান এবং পানশালার মাধ্যমে৷ এখন রাজ্যে প্রায় ৪,৫০০ বেসরকারি মদের দোকান, যার থেকে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়৷ রাজ্যের আবগারি দপ্তরের অনুমান, সরকার সরাসরি মদের ব্যবসায় নামলে এই আদায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ২০ হাজার কোটি হতে পারে৷প্রাথমিক পর্যায়ে ঠিক হয়েছে, প্রায় ২,০০০ মদের দোকান এবং পানশালা খুলবে সরকার৷ জেলার সেইসব অঞ্চলে, যেখানে এখনো কোনো মদের দোকান নেই৷ এইসব দোকান চালাবে রাজ্য সরকারের বেভারেজ করপোরেশন, বা পানীয় নিগম৷কিন্তু মমতা ব্যানার্জি সরকারের এই বাণিজ্যিক উদ্যোগ নিয়ে সঙ্গত কারণেই আপত্তি, অভিযোগ উঠছে৷ বিশেষত প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে যেখানে মদ্যপানের সমস্যা থেকে সমাজকে মুক্তি দিতে রাজস্ব ক্ষতি সত্ত্বেও মদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার, গুজরাটে দীর্ঘদিন ধরেই মদ কেনা-বেচা নিষিদ্ধ, বিধিনিষেধ আরোপিত আছে মহারাষ্ট্র এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যেও, মূলত জনস্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ হঠাৎ কেন শুঁড়িখানার ব্যবসায় নামল, সে প্রশ্ন উঠছে৷যেখানে আরও বেশি স্কুল-কলেজ দরকার, সুলভে চিকিৎসার সুযোগ দরকার, আরো বেশি সরকারি হাসপাতাল দরকার, সেখানে কেন মদের দোকানের সংখ্যা বাড়াতে মনোযোগী হলো সরকার? আরও পড়ুন মিজোরামকে এক ইঞ্চি জমিও দেবো না: মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত পেয়ারা বিক্রি করছেন এএসপি, ছবি ভাইরাল